এমআরআই পরীক্ষা কী

এমআরআই পরীক্ষা কী

এমআরআই পরীক্ষা কী


এমআরআই পরীক্ষা কী

এমআরআই পরীক্ষা কী রোগ নির্ণয়ের অত্যাধুনিক একটি পরীক্ষা পদ্ধতি ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স ইমেজিং ( এমআরআই ) শরীরের ভেতরের কোন অঙ্গের স্পষ্ট ছবি পেতে এই পরীক্ষা করা হয় । এর মাধ্যমে সে অঙ্গের যেকোনো অস্বাভাবিক অবস্থা বা নির্দিষ্ট কোনো রোগ খুব সহজেই নির্ণয় করা যায় । এমআরআই পরীক্ষা কী

যেসব রোগ নির্ণয়ে এমআরআই

মস্তিষ্ক , মেরুদন্ড , হদপিন্ড দেহের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের যেকোনো সমস্যা নির্ণয় করতে এমআরআই একটি নির্ভরযোগ্য পরীক্ষা । এর মাধ্যমে যেসব রোগ নির্ণয় করা যায় —

  • টিউমার , স্ট্রোকসহ মস্তিকের অন্যান্য রোগ ।
  • মেরুদন্ডের রোগ বা আঘাত ।
  • হাঁটু , গোড়ালি , কব্জি , কাঁধ ইত্যাদি অস্থিসন্ধি , হাড় ও মাংস পেশির সমস্যা ।
  • রক্তনালির রোগ ।
  • নাক , কান , গলা ও চোখের সমস্যা ।
  • প্রোস্টেটের সমস্যা ।
  • ক্যান্সার ।
  • নারীদের তলপেট ও স্তনের অস্বাভাবিকতা ।
  • লিভার ,কিডনি , পিত্তনালিসহ বিভিন্ন আন্ত্রিক রোগ ।

যেভাবে এমআরআই  করা হয়


 

শোয়ানো অবস্থায় রোগীকে এমআরআই যন্ত্রে প্রবেশ করানো হয় । এ সময় সম্পূর্ণ  শান্ত ও শিথিল ভাবে শুয়ে থাকা জরুরি । একটু নড়াচড়া করলে ছবি ঝাপসা হতে পারে এবং ফলাফল ভুল হওয়ার আশঙ্কা থাকে । পরীক্ষা চলাকালে একধরণের শব্দ তৈরি হয় । এই শব্দ স্বাভাবিক । এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই । অনেক রোগীই স্থিরভাবে শুয়ে থাকতে পারেন না । তাদের একটি ইনজেকশনের মাধ্যমে হালকা  পাড়িয়ে রাখা হয় । এটিও খুব স্বাভাবিক । এর কোনো দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব পড়ে না । এমআরআই পরীক্ষা কী

পরীক্ষার সময়সীমা 

পরীক্ষাটি করতে সাধারণত ১০ থেকে ৪০ মিনিট সময় লাগে । তবে কখনো কখনো এক ঘন্টা ও লেগে যায় । এই পুরো সময়টা টেকনোলজিস্ট ( স্ক্যানার অপারেটর ) মনিটরে রোগীকে পর্যবেক্ষণ করেন । রোগী প্রয়োজন মনে করলে বা পরীক্ষাকালে কোনো অস্বাভাবিকতা অনুভব করলে অপারেটরেটরের সাথে কথা বলতে পারেন বা যোগাযোগ করতে পারেন ।

নিরাপদ ও পাশ্বপ্রতিক্রিয়াহীন

পরীক্ষাটি একদম ব্যাথাবিহীন এবং অনেক বেশি সূক্ষ ও নিরাপদ । অন্যান্য স্ক্যানের মতো এই পরীক্ষায় কোনো ক্ষতিকারক বিকিরণ বা তেজস্ক্রিয়তা হয় না । ফলে এতে ক্ষতিকর কোনো পাশ্বপ্রতিক্রিয়াও নেই । স্বল্প বা দীর্ঘ মেয়াদি  কোনো টিস্যুর ক্ষতি করে না । এতে ব্যবহীত কনট্রাস্ট এজেন্ট কোনো সমস্যার সৃষ্টি করে না ।

সতর্কতা

এমআরআই পরীক্ষা কী


সতর্কতা

যেকোনো ধাতব বস্তু এই পরীক্ষাটির ক্ষেত্রে ঝুকিপূর্ণ । ফলে রোগীর দেহের অভ্যন্তরে বাইরে কোনো ধাতব বস্তু আছে কি না , তা

ভালোভাবে পরীক্ষা করে নিতে হবে এবং অবশ্যই সেগুলো দেহ থেকে অপসারণ করতে হবে । যেমন হার্টে কৃত্রিম ভালভ , হাড়ের

জোরে রড বা মুখে কৃত্রিম দাঁত লাগানো থাকলে তা আগেই জানাতে হবে । মানিব্যাগ , এটিএম বা অন্যান্য কার্ড , পার্স ,

ইয়ারফোন , ঘড়ি , চশমা , কলম , চাবি , জুতা , ক্লিপ , গয়না , সেফটি পিন , মুঠোফোন প্রভৃতি সঙ্গে থাকলে তা সরিয়ে ফেলতে হবে । এমআরআই পরীক্ষা কী

পরীক্ষাটি যারা  করাতে পারবেন না


যেকোনো বয়সী রোগীর জন্য এমআরআই ফলপ্রসূ এবং নির্ভরযোগ্য একটি পরীক্ষা । তবে কিছু রোগীর ক্ষেত্রে এই পরীক্ষাটি সাময়িকভাবে এড়িয়ে চলা ভালো ।

  • গভাবস্থার প্রথম তিন মাস পরীক্ষাটি এড়িয়ে চলা নিরাপদ । তবে অন্যান্য সময়ে ঝুকি নেই ।
  • ৮ সপ্তাহের মধ্যে চোখ , কান , নাক, গলা , হার্ট , মস্তিষ্ক বা রক্তনালির কোনো অস্ত্রোপচার হয়ে থাকলে সাময়িকভাবে এই পরীক্ষা থেকে বিরত থাকাই ভালো ।

তবে এসব ক্ষেত্রে রোগীর অবস্থা বিবেচনা করে  বিশেষজ্ঞ  চিকিৎসক এবং এবং রেডিওলজিস্টরা সিদ্ধান্ত নেবেন ।

এমআরআই বিভিন্ন ধরণের হতে পারে


এমআরআই বিভিন্ন ধরণের হতে পারে
এমআরআই বিভিন্ন ধরণের হতে পারে
  1. ফাংশনাল এমআরআই (FMRI):  মস্তিষ্কের কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করতে ব্যবহিত ।
  2. ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স এনজিওগ্রাফি (MRA): রক্তনালীর চিত্র ধারণের জন্য ব্যবহিত ।
  3. ডিফউশন টেনসোর এমআরআই (DTI): মস্তিষ্কের  স্নায়ুতন্ত্রের অবস্থা বুঝতে ব্যবহিত ।

এম একেবারে ব্যথাহীন , তবে রোঘীকে স্থির থাকতে বলা হয় , কারণ কোনো চলাচল ছবি স্পষ্ট হতে বাধা দেয় ।

এমআরআই এর প্রধান সুবিধাবলি


  1. বিকিরণ মুক্ত: এমআরআই কোনো রকম বিকিরণ ব্যবহার করে না , যা এটি আরও নিরাপদ ও ঝুকি মুক্ত ।
  2. নরম টিস্যুর চিত্র: এটি বিশেষভাবে মস্তিষ্ক , মেরুদন্ড , জয়েন্ট , লিভার , কিডনি এবং অন্যান্য নরম টিস্যুর সমস্যার জন্য উপকারী ।
  3. রোগ নির্ণয়: ক্যান্সার , টিউমার , মস্তিষ্কের সমস্যা ইত্যাদি নির্ণয়ে সহায়ক ।
এমআরআই কিভাবে কাজ করে

এমআরআই কিভাবে কাজ করে

শরীরের ভিতরে প্রবাহিত একটি শক্তিশালী চুম্বক ক্ষেত্র এবং রেডিও তরঙ্গ ব্যবহার করা হয় । এই তরঙ্গ

শরীরের মধ্যে পারস্পরিক প্রতিক্রিয়া তৈরি করে  এবং সেখান থেকে পাওয়া সিগন্যাল গুলো ছবি হিসেবে পরিণত হয় ।

এমআরআই তে কোন ধরণের বিকিরণ ব্যবহার করা হয় না , যার কারনে এটি অনেক নিরাপদ পদ্ধতি ।

সুতরাং বলা যায় , এমআরআই নির্দিষ্ট রোগ বা অবস্থার দ্রুত ও সঠিক নির্ণয়ে সহায়ক ,  তবে এটি কিছু ক্ষেত্রে ব্যয়বহুল হতে পারে । এমআরআই পরীক্ষা কী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *