স্বাস্থ্য

স্বাস্থ্য বলতে কী বুজায়?

স্বাস্থ্য

 

স্বাস্থ্য বলতে কী বুঝায়:রোগ বিষযটা যেমন সহজে বুঝা যায়,স্বাস্থ্য ধারাণাটি এতো সহজকিআপনার রোগ নেই, স্বাস্থ্য বলতে কী বুঝায় বলেই কি

বলতে পারেনআপনি স্বাস্থ্যবান?স্বাস্থ্য বলতে কী বুঝায়ভেবে দেখুন ব্যাপারটি এমন সহজ নয়।হয়তো বয়স অনুযায়ী আপনার যে ওজন ,স্বাস্থ্যযে কর্মদক্ষতা

থাকার কথা তা আপনার নেই।অন্যেরা আপনাকে স্বাস্থ্যবান মনে করেনা,আপনি তো নন-ই।তাহলে স্বাস্থ্যকে সংজ্ঞায়িত

করব কিভাবে ? অগত্যা বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা  (WHO) বর্ণিত,একটি মোটামুটি সর্বমান্য সংজ্ঞার সাহায্য নেয়া যাক

সেই মতে,অসুস্থতা বা অক্ষমতার অনুপস্থিতিই স্বাস্থ্য নয়; শারীরিক,মানসিক ও সামাজিক,এই তিনদিকে পরিপূর্ণ ভাবে

ভালো থাকাই হল


স্বাস্থ্য সুন্দর সংজ্ঞা

বটেকিন্তু আমাদের বোধগম্যতার গোলমিটলকি আমার তো মনে হচ্ছে,কোঁচো খুঁড়তে গিয়ে

সাপ ওঠে এল।আসলে আমরা আমাদের শরীর নিয়েই ভাবছিলাম।এখন এর মধ্য মন ও সমাজ যুক্ত হয়ে পুরো বিষয়টাকে

গুবলেট পাকিয়ে দিল।বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার এ—সংজ্ঞাটি ‍নিয়েও সবাই সন্তুষ্ট নন।বিশেষত  যারা প্রফেশনাল,তারা এমন

আদর্শিক সংজ্ঞা চান না।তারা চান এমন সংজ্ঞা ,যা তা তাদের বিশেষ জ্ঞাতার সীমার মধ্যে পড়বে।তাই তাদের মতে,

রোগ বা অক্ষমতা নেই,এটাইস্বাস্থ্য।তাহলে আমরা সহজেই পরিমাপ করে বলে দিতে পারব কারো স্বাস্থ্য আছে কি নেই,

এবং স্বাস্থ্য না থাকলে রোগ বা অক্ষমতার জন্য চিকিৎসাও করতে পারব।এটা নেতিবাচক অর্থ স্বাস্থ্যকে সংজ্ঞায়ন।

এ বিবেচনায়,বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থারসংজ্ঞাটি ইতিবাচক অর্থে স্বাস্থ্যকে সংজ্ঞায়ন।বিশেষজ্ঞ দের সমালোচনায় জবাবে


ইতিবাচক সংজ্ঞায়ন

কারী গণ কি জবাব দেবেন? তারা বলবেন,একজন নিরোগ হলেই আমরা সন্তুট নই।তিনি

বয়স অনুযায়ী ওজন,কর্মক্ষমতা ইত্যাদি কাক্সিক্ষত বৈশিষ্ট্যা বলী ধারণ করেন কিনা,আমরা সেটা দেখতে চাই।

তারা প্রশ্ন করবেন ,কারো যদি মন ভালো না থাকে,তার প্রভাব তো শরীরে ও পড়ে ।মন ভালো না থাকলে মানুষ

পূর্ণ মাত্রায় কর্মক্ষম থাকে কি?কারোযদি সামাজিকঅবস্থাভালোনাথাকে,তবে তিনি মানসিকভাবে ভালথাকতেপারনকি?

মানুষ হিসাবে সুস্থ শরীর ও মন নিয়ে একটি ভালো সামাজিক অবস্থানে স্থিত থাকাই কি আমাদের সবার কাম্য নয় ?

আমার মনে হয়না,কেউ বক্তব্য টির সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করবেন।কিন্তু এতে স্বাস্থ্যের সংজ্ঞাটি বিদ্যমান স্বাস্থ্য সেবা

ব্যবস্থাকে ছাপিয়ে গিয়ে পুরো আর্থিক–সামাজিক — রাজনৈতিক ব্যবস্থাতে ব্যাপ্ত হয়ে পড়ে;  কোন বিশেষজ্ঞতার

সীমায় আর গণ্ডী বদ্ধ থাকে না।অথচ স্বাস্থ্য বলতে তোআমাদের এমন টিই কাম্য।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্বাস্থ্যের সংজ্ঞার সঙ্গে


বিশেষজ্ঞদের স্বাস্থ্যের সংজ্ঞার

এই পার্থক্য,মনে প্রশ্ন জাগায়  কোন বিষয়ের সংজ্ঞা কিভাবে নির্ধারিত হয়।?

আমরা যে বিষয়কে সংজ্ঞায়িত করতে চাই,তার বৈশিষ্ট্যাবলী যে এর একটি নির্ণায়ক,তাতো আমরা দেখতেই পাচ্ছি।

আরেকট নির্ণায়ক চট করে চোখে পড়েনা।তাহ’ল’কি উদ্দেশ্যে আমরা সংজ্ঞায়ন করতে চাচ্ছি,তা।স্বাস্থ্য সমন্ধে

বিশেষজ্ঞদের সংজ্ঞায়নের সঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সংজ্ঞায়েনর যে পার্থক্য ,তা বিষয়ের বৈশিষ্ট্য থেকে উদ্দেশ্যর

পার্থক্য কেই বেশী প্রতিফলিত করে।আমরা দেখেছি,বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার সংজ্ঞাটির একটি রাজনৈতিক মাত্রা রয়েছে।

এজন্য সংজ্ঞাটি তখনই গৃহিত হতে পেরেছিল,যখন বিশ্বের রাজনৈতিক পরিস্থিতি একটা জনকল্যাণ মুখী আদর্শের

প্রতি অনেকটা অনুকুল ছিল।বর্তমানে বিশ্ব রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষে।

স্বাস্থ্যের এমন সংজ্ঞা প্রণয়ন সম্ভব হ’তনা।বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা কর্তৃক  স্বাস্থ্যের  এ — সংজ্ঞাটি গৃহিত হয়েছিল


‘প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ‘সম্পর্কে

আলমাআতাঘোষণা– ১নং দফা হিসাবে।ঘোষণা পত্রের লিস্কটি লেখার শেষে যুক্ত করা হয়েছে।বিশ স্বাস্থ্য সংস্থা আয়োজিত প্রাথমিক

স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক আন্তজার্তিক সন্মেলন,যাতৎকালীন সোভিয়েতইউনিয়নের অন্তর্গত কাজাখসোভিয়েতপ্রজাতন্ত্র–র (বর্তমানকাজাখস্থান )তৎকালীনরাজধানীআলমাআতা—তে ১৯৭৮সনের —১২সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত হয়।নিচে ১নং ধারাটি উদ্ধৃত করলাম।এতেই ঘোষণাটির রাজনৈতিক দিকটি স্পষ্ট।


মানসিকস্বাস্থ্য:

শারীরিক স্বাস্থ্য সম্বদ্ধে আমাদের কমবেশী একটি ধারণা রয়েছে। এটি

অনেকটাই চাক্ষুষ,স্পর্শযোগ্য।কিন্তু মানসিক স্বাস্থ্য? এ—তো সরাসরি দেখা বা ছোঁয়া যায়না।কিন্তু বিশ্বস্বাস্থ্য

সংস্থার সংজ্ঞা তে দেখলাম মানসিক স্বাস্থ্য,স্বাস্থ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ বটে।শারীরিক স্বাস্থ্যের বিশেষজ্ঞদের মতো

মানসিক স্বাস্থ্যের বিশেষজ্ঞও রয়েছেন। এ— ব্যাপারে তারা কি বলেন? তাদের মতে,আমরা একজনকে তখনই

মানসিকভাবে সুস্থবলব,যখন তিনি মানসিক ভাবে সুস্থ কোন ব্যক্তিরবৈশিষ্ট্যা বলীকে ধারণ করেণ।মানসিকভাবে সুস্থব্যক্তিদের বৈশিষ্ট্য:

১)তারা নিজেদের সম্পর্কে ভালো অনুভব করেন।

২)তারা অন্যদের সঙ্গে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।

৩)তারা জীবনের দাবী পূরণ করতে সক্ষম।

বিষয়টাকে আরেকটু বিস্তৃত করা যাক।তারা উদ্বেগ ,ভয় ,ক্রোধ,ঈর্ষা,অপরাধ বোধ,ইত্যা কার আবেগে নিজেদের আচ্ছন্ন করে ফেলেন না।

তারা জীবনের হতাশা গুলোকে সহজেই কাঠিয়ে উঠতে পারেন।নিজেদের ও অন্যদের প্রতিতাদের এটা সহিষ্ণুও সহজ মনোভাব থাকে এবং তারা নিজেদের সবকিছু সহজে গ্রহন করতে পারেন।

তারা তাদের ক্ষমতাকে ছোট বা বড় করে দেখেন না।তারা তাদের অক্ষম তাকে মেনে নেন।তারা আত্নসম্মান বোধসম্পন্ন মানুষ।

মানসিকভাবে সুস্থবলব:

তারা বিভিন্ন অবস্থার সাথে মানিয়ে চলতে পারেন।তারা সাধারণ ও নৈমিওিক বিষয় থেকে আনন্দ লাভ করেন।তারা অন্যদের সঙ্গে  স্বাচ্ছন্দ্য করেন মানে তারা অপরকে ভালবাসেন এবং

অন্যের স্বার্থ কে বিবেচনা করেন।তাদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক গুলো তৃপ্তি কর ওটেকসই।তারা অন্যদের পছন্দ এবং বিশ্বাস করেন।অন্যরা ও তাদের পছন্দ  ও বিশ্বাস করবে বলে আস্থা রাখেন।তারা মানুষের

বিদ্যমান স্বকীয় পার্থক্য গুলিকে সম্মান করেন তারা অপরের ভাল মানুষির সুযোগ নেননা এবং নিজেদের ভালো মানুষিকে অন্যের দ্বারা ব্যবহারের সুযোগ দেন না।তারা নিজেদের নিজ নিজ গোষ্ঠী বা

সমাজের একটা অংশ বলে গন্য করেন  তারা আশেপাশের মানুষের প্রতি তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য আছে বলে অনুভব করেন।তারা জীবনের দাবীপূরণ করতে সক্ষম মানে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *