
Anal ও Fissure দুটি ইংরেজী শব্দ। Anal অর্থ হলো পায়ুপথ,মলদ্ধার
এবং Fisssure অর্থ হলো ফাটল বা চিড়।অর্থাৎ পায়ুপথ বা মলদ্ধারছিঁড়ে গিয়ে সেখানে যে ক্ষত হয় ইংরেজিতে সেটাকে Anal Fisssure
বলে।এনাল ফিসার হলে মলত্যাগ করার সময় মলদ্ধার দিয়ে রক্ত বের হয় এবং ব্যাথা হয়।এনাল ফিসার থেকে মুক্তির উপায়গুলো
জানা থাকলে রোগটি থেকে নিজেকে সহজেই মুক্ত রাখা যায়।পায়ুপথের রোগ হওয়ার দীর্ঘদিন এ সমস্যায় ভোগা সত্তেও অনেকেই
চিকিৎসকের কাছে যেতে চান না।ফলে ধীরে ধীরে জটিল আকার ধারণ করে সমস্যাটি ।একপর্যায়ে অপারেশন ছাড়া এ রোগ প্রতিকার
কোনো উপায় থাকেনা।অথচ এনাল ফিসার সম্পর্কে সচেতন থাকলে শুরুতেই জটিল এপরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব হত।তাই ব্লগটিতে এনাল
ফিসার ও এর প্রতিকারগুলো তুলে ধরা হয়েছে
এনাল ফিসার থেকে মুক্তি পেতে করণীয়:
এনাল ফিসার বা গেজ রোগ থেকে মুক্ত রাখতে পরিবর্তন করতে হবে খাদ্যভ্যাস।অবলম্বন করতে হবে প্রাথমিক কিছু উপায়।সর্বোপরি সচেতেন হয়ে চলতে পারলে রোগটি থেকে সৃষ্ট যেকোনো জটিল
পরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব হয়।নিচে এনাল ফিসার থেকে মুক্তির
উপায়গুলো তুলে ধরা হলো:খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন:যেসব খাবারে ফ্যাটের পরিমাণ অত্যধিক বেশি থাকে সেসব খাবার এড়িয়ে চলা ।কারণ এসব খাবার বদহজমের সৃষ্টি
করে এবং মল শক্ত করে দেয়।ফাইবার বা আঁশযুক্ত খাবার বেশি খাওয়া।যেমন : শাকসবজি ,লাল আটা ,ফলমূল ,পাকাবেল ,ইত্যাদি।পর্যাপ্ত পানি পান করা এবং স্বাভাবিক খাবারের পাশাপাশি তরল খাবার খাওয়া।
নিয়মিত ইসবগুলের ভুসি খাওয়া:ইসবগুলের ভুসি অত্যন্ত উপকারীখাবার।এটি পায়খানা স্বাভাবিক করে।স্বাভাবিক পায়খানা হচ্ছে পাকা কলার মত নরম।এর চেয়ে বেশি পাতলা বা বেশি শক্ত উভয়ই খারাপ।
প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস পানিতে ২ চা চমচ ইসবগুল মিশিয়ে খেলে পায়খানা এ রকম নরম থাকে।তবে কেউ যদি ইসবগুলেরভুসি খেয়ে পর্যাপ্ত পানি পান না করে ,তার মল আরও শক্ত হয়ে যায়।
পায়ুপথ পরিচ্ছন্ন করে নেওয়া এবং জায়গাটি শুকনো রাখার চেষ্টা করা।এতে পায়ুপথ ক্ষত হওয়া থেকে নিরাপদ থাকবে।দীর্ঘক্ষণ পায়খানা চেপে না রাখা:পায়খানা চেপে রাখার বদভ্যাস
থাকলে দূর করতে হবে।কারণ পায়খানা চেপে রাখলে তা শক্ত হয়েকোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়।ফলে শক্ত মলের আঘাতে মলদ্বার ছিঁড়ে
গিয়ে এনাল ফিসার হয়।নিয়মিত হালকা ব্যায়ামকার:প্রতিদিন নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করলেBowel Movement (মলত্যাগ) বাড়ে।ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যমুক্ত জীবনযাপন করা এবং এনাল ফিসার থেকে মুক্ত থকা যায়।
এনাল ফিসার কী?
Anal ও Fissure দুটি ইংরেজি শব্দ।Anal অর্থ হলো পায়ুপথ ,মলদ্বার
এবংFissureঅর্থ হলো ফাটলবা চিড়।অর্থাৎপায়ুপথ বা মলদ্বার ছিঁড়ে
গি্য়এনাল সেখান যে ক্ষত হয় ইংরেজিতে সেটাকে Anal Fissureবলে।
এনাল ফিসার কেন হয়?
এনাল ফিসার থেকে মুক্তির উপায় জানার পর মনে এ কৌতুহল সৃষ্টি
হতে পারে যে,রোগটি কেন হয়? মল শক্ত হয়ে সেটার আঘাতে মলদ্বার ছিঁড়ে গিয়ে এনাল ফিসার হতে পারে।তবে অতিরিক্ত ডায়রিয়া ,আলসারেটিভ কোলাইটিস ,মলদ্বারের মাংশপেশি টাইট হয়ে যাওয়া,যৌনবাহিত সিফিলিস -হারপিস রোগ ,সমকামিতা বা এনাল সেক্স ,গর্ভকালীন কোষ্ঠকাঠিন্য ও ইনফেকশনের কারণেও
রোগটি হতে পারে।
এনাল ফিসারের লক্ষণগুলো ?
কিছু লক্ষণ আছে যেগুলো দেখে বুঝা যায় মলদ্বারে এনাল ফিসারের সমস্যা হয়েছে।রোগটি সম্পর্কে সবাই যেন সচেতন হতে পারেে এ জন্য নিচে রোগটির লক্ষণগুলো তুলে ধরা হলো:
১.মলত্যাগের সময় যন্ত্রণাদায়ক ব্যাথা হওয়া।
২.পায়খানার সাথে রক্ত যাওয়া ।
৩.মলদ্বারে অতিরিক্ত চামড়া সৃষ্টি হওয়া।
৪.পায়ুপথে চুলকানি হওয়া।
৫.মলদার সরু হয়ে যাওয়া।
যেভাবে নির্ণয় করা হয় এনাল ফিসার
একজন কলারেকটাল সার্জন নানান শারীরিক পরীক্ষার মাধ্যমে রোগীর এনাল ফিসার নির্ণয় করে থাকে।প্রয়োজন হলে রোগ নির্ণয়ের জন্য কলোনোস্কপিও করে থাকেন।
মলদ্বারের ব্যাথার ঘরোয়া চিকিৎসা
এনাল ফিসার থেকে মুক্তির উপায় হিসেবে ঘরোয়া কিছু চিকিৎসা রয়েছে।যেগুলো অবলম্বন করলে রোগটি থেকে প্রাথমিক অবস্থায়
পরিত্রাণ পাওয়া যায়।এ চিকিৎসাগুলো হলো:
গরম পানির সেঁক নেওয়া (Sitz bath): একটি বলে কুসুম গরম পানিসেখানে পরিমাণমত ভায়োডিন সল্যুশন অথবা খাবার লবন মিশিয়ে
মলদ্বারে ডুবিয়ে বসে থাকা ।এতে মলদ্বারের মাংশপেশি কিছুটা শিথিল হয় এবং ব্যাথা কমে আসে।দিনে ২ থেকে ৩বার গরম পানির সেঁক নিলে এনাল ফিসার রোগীরা বেশ স্বস্তি পেয়ে থাকেন।
মলদ্বারের মুখে পিচ্ছিল পদার্থের প্রয়োগ: এনাল ফিসার থেকে মুক্তির উপায় হিসেবে মলদ্বারের মুখে পিচ্ছিল পদার্থ ,গ্লিসারিন বা পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করা।এতে মলত্যাগের সময় ছেঁড়া জায়গায় ঘর্ষণের ফলে সৃষ্ট ব্যাথার তীব্রতা কিছুটা কমে।
মলত্যাগের সময় বেশী জোরে চাপ দেয়া থেকে বিরত থাকা : মলত্যাগের সময় বেশি জোরে চাপ দিলে মলদ্বার আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে ।সমস্যা আরও জটিল হতে পারে ।এজন্য আগে রিল্যাক্স হয়ে তারপর স্বাভাবিক চাপে পায়খানা করা।
মল নরম করার ঔষধ: শক্ত মল বা কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে অনেকসময় মলদ্বার ছিঁড়ে যায়।এজন্য কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় অভিজ্ঞ
চিকিৎসকের স্নরণাপন্ন হওয়া এবং তাঁর পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ঔষধ গ্রহণ করা ।ঘরোয়া চিকিৎসা হিসেবে ইসবগুলের
ভুসি ও পাকা বেলের শরবত খাওয়া।অনেকে লজ্জা করে এনাল ফিসারের চিকিৎসায় অবহেলা করে থাকেন।এমনটা করা উচিৎ নয়।
অবহেলা করলে ক্ষতস্থানে ফিস্টুলা ও পায়ুপথের ক্যান্সার ইত্যাদি রোগ হতে পারে।