ডিম
বেশিরভাগ পাখি ও সরীসৃপে হল নিষিক্ত ডিম্বাণুর মাধ্যমে সৃষ্ট জাইগোট।
ডিম্বস্ফোটোনের জন্যে ডিমের ভেতর যথাযথ তাপমাত্রা বজায় রাখার ব্যবস্থা থাকে এবং ভ্রূণের প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও
নিরাপত্তাও ডিম সরবরাহ করে। ভ্রূণ পরিণতি লাভ করার পর ডিম ফুটে বেরিয়ে আসে। কিছু ভ্রুণের ডিমের খোলস
ভাঙ্গার জন্যে অস্থায়ী ডিম দাঁতও থাকতে দেখা যায়।
ওভিপ্যারাস প্রাণিরা ডিম পেড়ে থাকে, মায়ের শরীরের অভ্যন্তরের ভ্রুণের খুবই সামান্য বা কোন বিকাশই ঘটে না।
ডিম পর্যবেক্ষণ ও সংগ্রহ করার বিদ্যাকে উওলজি বলা হয়।
সরীসৃপ, পাখি এবং অন্যান্য প্রাণী যারা জলে পাড়ে না, তাদের একটি রক্ষাকারী আবরণে আবৃত থাকে,
যাকে ডিমের খোসা বলা হয়। এই আবরণ নমনীয় বা অনমনীয় – দুইই হতে পারে। যে বিশেষ ঝিল্লি দ্বারা ডিম
প্রতিপালিত হয় তা সকল এমনিটোনেরই বৈশিষ্ট্য, যার মধ্যে স্তন্যপায়ীরাও অন্তর্ভুক্ত।
১.৫ কেজি ওজনের অস্ট্রিচের ডিম এখন পর্যন্ত জানা অস্তিত্বশীল সবচেয়ে বড় কোষ, যদিও এপিওমিস এবং কিছু কিছু ডাইনোসরের ডিম এর চাইতেও বড় হত। বি হামিংবার্ডের ডিম পাখিদের মধ্যে ক্ষুদ্রতম, ওজন মাত্র আধ গ্রাম।
কিছু সরীসৃপ ও বেশিরভাগ মাছের এর চাইতেও ছোট হয়, এবং কীটপতঙ্গ ও অমেরুদণ্ডীদের ডিম তার চাইতেও ক্ষুদ্র।
ডিম একটি সহজলভ্য ও উন্নতমানের আমিষজাতীয় খাদ্য; যাতে রয়েছে প্রাকৃতিক ভিটামিন, যা দেহগঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সব ধরনের ডিমে রয়েছে অতি মূল্যবান ওমেগা-৩, যা হৃৎপিণ্ডকে কার্যকর রাখতে সাহায্য করে।
একটি মাঝারি আকারের রান্না করা ডিমে (৫০গ্রাম) ৭৮ ক্যালোরি,৬.২৯ গ্রাম প্রোটিন, ০.৫৬ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট এবং ৫.৩ গ্রাম মোট ফ্যাট রয়েছে, যার মধ্যে ১.৬ গ্রাম স্যাচুরেটেড ফ্যাট,২.০ গ্রাম মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট,০.৭ গ্রাম ফ্যাট
এবং ১৮৬ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল।
মুরগির ডিম
একটি সাধারণ মুরগির ডিমে প্রোটিন আছে প্রায় ছয় গ্রাম, যাতে রয়েছে মানবদেহের জন্য অত্যাবশ্যকীয়
নয়টি অ্যামিনো অ্যাসিড। মুরগির ডিমে রয়েছে অতি মূল্যবান ওমেগা-৩, যা হৃৎপিণ্ডকে কার্যকর রাখতে সাহায্য করে।
কোলিন ডিমের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যা গর্ভবতী মায়ের মস্তিষ্কজনিত জটিলতা দূরীকরণে সহায়তা করে,
গর্ভাবস্থায় শিশুর মেধা ও স্মৃতি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ডিমে আছে ফলিক অ্যাসিড অথবা ফোলেট, যা ত্রুটিপূর্ণ সন্তান
জন্মদানের ঝুঁকি কমায়। এ ছাড়া রয়েছে সেলেনিয়াম, যা মানুষের মানসিক চাপ কমাতে সহায়তা করে এবং ক্যানসার,
বিশেষত প্রোস্টেট ক্যানসার রোধে সহায়তা করে। ডিমে রয়েছে ৫ গ্রাম কোলেস্টেরল, যার প্রায় ৩.৫ গ্রাম উপকারী ও
ভালো কোলেস্টেরল, যা মানুষের দৈনন্দিন কার্যক্রমে প্রয়োজন, হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। ডিমে রয়েছে লিউটিন ও
জিয়াজ্যান্থিন, যা চোখের ছানি পড়া রোধে সহায়তা করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন সুস্থ মানুষ দিনে একটি খেতে পারে।
জাতিসংঘের কৃষি ও খাদ্য সংস্থার সুপারিশ অনুযায়ী বছরে প্রত্যেক মানুষের গড় গ্রহণ ন্যূনতম ১০৪ টি হওয়া উচিত। ডিমের সাদা অংশে ১১% প্রোটিন ও হলুদ অংশে ১৬% প্রোটিন রয়েছে। ডিমে ক্যালসিয়াম রয়েছে।
ডিমে রয়েছে ৫ গ্রাম কোলেস্টেরল, যার প্রায় ৩.৫ গ্রাম উপকারী ও ভালো কোলেস্টেরল, যা মানুষের দৈনন্দিন কার্যক্রমে প্রয়োজন,
হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। ডিমে রয়েছে লিউটিন ও জিয়াজ্যান্থিন, যা চোখের ছানি পড়া রোধে সহায়তা করে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন সুস্থ মানুষ দিনে একটি খেতে পারে।
ডিম খেলে শরীরে দ্রুত অ্যানার্জি আসে। ডিমে থাকা ভিটামিন থেকেই মূলত এই অ্যানার্জি বা শক্তি মেলে। এতে থাকা
ভিটামিন বি খাদ্যকে অ্যানার্জি বা শক্তিতে রূপান্তরিত করে। তাই প্রতিদিন সকালে একটি সেদ্ধ খেলে সারাদিন ক্লান্তহীন থাকবেন।
ডিমে থাকে ভিটামিন এ। যা দৃষ্টিশক্তিকে উন্নত করে। তাছাড়া ডিমে থাকা কেরোটিনয়েড আর ল্যুটেন বয়স হয়ে
গেলে চোখের এক বড় সমস্যা, ম্যাকুলার ডিজেনারেশন হওয়ার সম্ভাবনা কমায়।
ডিমে থাকা ভিটামিন ই কোষ আর ত্বকে থাকা ফ্রি র্যাডিকেল ধ্বংস করে। তাই ক্যানসারের ঝুঁকি কমে। এছাড়াও
নতুন কোষ তৈরি হতেও সাহায্য করে থাকে। নিয়মিত খেলে ব্রেস্ট ক্যানসারের সম্ভাবনা অনেক কমে যায়।
