মেয়েদের চুল ভালো রাখার জন্য সহজ উপায়
মেয়েদের চুল ভালো রাখার জন্য সহজ কিছু টিপস :রূপকথার গল্প হোক বা বাস্তব,মেয়েদের ঘন চুল আর তার রহস্য নিয়ে চর্চা হয়ে চলেছে আজীবন।
তবে এই ঘন কালো চুল যেমন দেখতে সুন্দর লাগে তেমনই তাকে যত্ন করাও প্রতিদিনের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে।
আমাদের চারপাশে এতজন চুল ভালো রাখার এত রকমের টিপস দেন যে আমরা কনফিউজড হয়ে পড়ি।
সেই কনফিউশন দূর করতে আজ মাত্র কয়েকটা পয়েন্টই আমি বলবো।যা নিয়ম করে মেনে চললে লম্বা,ছোট,কালো
লাল,স্টেট,কোঁকড়ানো-সব রকমের চুলই থাকবে ভীষণ স্বাস্থ্যকর ও সুন্দর।
তেলের যত্ন
খুব ছোটবেলায় যখন মা-ঠাকুমারা জোর করে ধরে এক মাথা তেল মাখিয়ে দিত।তারপর সেই জবজবে তেল মাখা চুলে
স্কুল যেতে হত,সে সব দিনের কথা মনে আছে নিশ্চয়,ওই জোর করে তেল মাখানোটাই ছিল চুলের যত্নের প্রথম টিপস।
আমরা তেল মাখাকে তেমন গুরুত্ব দিই না যতটা শ্যাম্পু বা কন্ডিশনারকে দিই।তাই গোড়াতেই গলদ থেকে যায়
অর্থাৎ চুলের গোড়া পুষ্টি পায় না।সুতরাং প্রায় প্রতিদিন বা সপ্তাহে অন্তত পাঁচদিন চুলে তেল দিয়ে ভালো করে মেসেজ করুন।
তেল অল্প একটু গরম করে নিলে আরো ভালো নাহলে শীতকালে খোলা জানলায় রোদে রেখে দেবেন।ভালো করে ম্যাসাজ করবেন চুলে যাতে ভেতর অব্দি তেল যায়।
কি তেল মাখবেন
এটা আপনার ইচ্ছের ওপরেই রাখলাম।নারকেল তেল থেকে ক্যাস্টর অয়েল আপনি যাতে স্বচ্ছন্দ সেটিই মাখুন।তেল পরিবর্তনে বিশাল কিছু তারতম্য হয় না।
শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার
অবশ্যই তেল মেসেজ করার পর বেশ কিছুক্ষণ রেখে (সারারাত রাখতে পারলে খুব ভালো,যাদের ঠান্ডার ধাত আছে তারা দুঘন্টা রাখলেই যথেষ্ট)
ভালো শ্যাস্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলা চুলের যত্নের দ্ধিতীয় গুরুত্বপর্ণ ধাপ।শ্যাস্পু ব্যবহারের মূলমন্ত্র একটাই,চুলে নয়,স্ক্যাল্পে শ্যাম্পু করা।
বেসিক ভুলটাই হয় এখানে।আমরা ভাবি যত বেশি ফেনা তত ভালো শ্যাম্পু করা।কিন্তু এতে শুধু শ্যাম্পুই নষ্ট হবে আপনার,
তার বেশি কোনও উপকার নেই।শ্যাম্পুও মেসেজ করে স্ক্যাল্পে লাগাতে হয়।সেখান থেকে যে ফেনা তৈরি হয় তা দিয়ে বাকি চুল শ্যাম্পু করা হয়।

মেয়েদের চুল ভালো রাখার জন্য সহজ উপায়
চুলে শ্যাম্পুর সরাসরি এফেক্ট কিন্তু নেই,আছে স্ক্যাল্পে।এটা প্লিজ মনে রাখবেন প্রত্যেকে।
শ্যাম্পুর পর আসে কন্ডিশনার।যে হচ্ছে চুলের বন্ধু অর্থাৎ যাকে চুলেই ভালো করে লাগাতে হয়,স্ক্যাল্পে নয়,
গোড়া থেকে এক ইঞ্চির দূরত্বে মাখুন,কন্ডিশনার লাগানোর পর খুব বেশি হলে দশ মিনিট রেখে তারপর ভালো করে ধুয়ে ফেলুন পুরো চুল।
এই চুল ধোয়ার ওপরেও কিন্তু চুলের যত্ন ভীষণভাবে নির্ভর করো।
চুল মোছার ধরণ
গোসলের পর নরম তোয়ালে বা গামছা দিয়ে আলতো করে মাথা মুছবেন।ঘষে ঘষে নয়,তাতে চুল গোড়া থেকে আলগা হয়ে ঝরে পড়ে বা ভেঙ্গে যায়।
চুুলে ব্রাশ করার ধরণ
তেল দেওয়ার মতই নিয়ম করে চুলে ব্রাশ করাটা খুব প্রয়োজন।কমপক্ষে সারাদিনে তিন বার।
তবে গোসল করেই চুল আঁচড়াবেন না তাতে বেশি চুল পড়ে।অল্প শুকিয়ে আস্তে আস্তে ব্রাশ করবেন।চুল আঁচড়ালে গোড়ায় রক্ত সঞ্চালন ভালো হয় যাতে চুল ভালো থাকে।
যে কোনও রকম গরম থেকে দূরে রাখুন
গরম পানি হোক বা চুল শুকোনোর ড্রায়ার।চুলকে সরিয়ে রাখুন সবরকম গরম বা উষ্ণ বস্তুর থেকে।
গরম হল চুলের সবথেকে বড় শত্রু।শীতকালে তা অসম্ভব হলে একদম হালকা গরম পানি দিয়ে শুধু মাথাটা
ধুয়ে নেবেন।চুল শুকানোর সময়েও গরম হাওয়াযুক্ত ড্রায়ার ব্যবহার করবেন না।ড্রায়ারে যে নর্ম্যাল মোড থাকে
যা দিয়ে ঠান্ডা হাওয়া বেরোয় সেটি দিয়ে চুল শুকাবেন।তেমনই চুলে হিট দেওয়া আর এক মারাত্নক ক্ষতিকর কাজ।
খুব প্রয়োজন না পড়লে এটি এড়িয়ে চলুন।পেশাগত কারণে প্রয়োজন হলে মাসে দু-তিনবার।ব্যস!
চুলের হেয়ার প্যাক
নিয়মিত যত্ন কি কি নেবেন সেগুলো তো বললাম।এবার আসি একটু স্পেশাল যত্নে।সপ্তাহে একবার করে হেয়ার প্যাক ব্যবহার করুন।
না বাজার চলতি হেয়ার প্যাকের কথা বলছি না।একদম ঘরোয়া জিনিস দিয়ে তৈরি প্যাক যার কোনও বিকল্প নেই।
যাদের চুল রুক্ষ,নির্জীব হয়ে পড়েছে তাদের জন্যু রইলো এই হেয়ার প্যাকটি,
ডিম-২টি,দই-৪ চামচ,মধু-১চামচ,লেবুর রস-আধখানা লেবু।প্রত্যেকটি উপকরণ নিয়ে তাদের ভালো করে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন।
তারপর চুলের স্ক্যাল্পে আলতো হাতে ম্যাসাজ করতে করতে লাগিয়ে ফেলুন।মাখার পর প্রায় এক থেকে দের ঘন্টা রেখে দিন।
যখন দেখবেন শুকনো হয়ে গেছে পুরোটা তখন প্রথমে পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নেবেন,একদম পরিষ্কার করে ধোবেন।
তাপর মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে পুরো চুল পরিষ্কার করে,কন্ডিশনার দিয়ে ধুয়ে গোসল করে নেবেন।
এক মাসে চারবার ব্যবহার করে দেখুন।নিজেই চুলের উন্নতি বুঝতে পারবেন।
একস্ট্রা টিপস
এতটা ধৈয্য নিয়ে পড়েছেন তাই একদম শেষে থাকছে দুটো একস্ট্রা টিপস
এলোভেরা জেল চুলের জন্য খুব উপকারী।বিশেষতঃযাদের খুশকি আছে তারা এলোভেরা জেল আর টি ট্রি অয়েল একসাথে
মিশিয়ে মাথায় মেসেজ করে দেখতে পারেন এক মাস,খুসকি পুরো চলে যাবে।