রাতে ঘুম না হওয়ার কারণ?

রাতে ঘুম না হওয়ার কারণ?

রাতে ঘুম না হওয়ার কারণ:বর্তমানে অনিদ্রার সমস্যা নেই এমন মানুষ খুব কম পাওয়া যায়।সারাদিনের ক্লান্তি নিয়ে ঘুমানোর জন্য

বিছানায় গেলেন,কিন্তুশোবার পর ঘুম তো আসেই না বরং সারারাত কাটে বিছানায় এপাশ-ওপাশ করে।

তবে ঘুমই হচ্ছে সুষ্ঠভাবে বেঁচে থাকার চাবিকাঠি।পর্যাপ্ত ঘুম না হলে কাজে মনোযোগ দিতে কষ্ট হয় এবং

সারাদিন মেজাজ খিটখিটে হয়ে থাকে।তাই আজকের ব্লগ পোষ্টে আমরা ঘুম না হওয়ার কারণ ও প্রতিকার

নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব।সাধারণত একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দৈনিক ৭-৮ ঘন্টা ঘুমানো

সুস্থ জীবনে ঘুমের গুরুত্ব:

ঘুমের মাধ্যমে আমাদের শরীর ও মন পুনরায় চাঙা হয়,এবং এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থেকে শুরু করে স্মৃতিশক্তি

পর্যন্ত উন্নত কবতে সহায়ক।আসুন,সুস্থ জীবনে ঘুমের গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানি।

.শারীারক পুনগৃঠন:ঘুমের সময় শরীরের কোষগুলি পুনরায় নির্মাণ হয়,যা আমাদের শরীরকে সুস্থ ও কর্মক্ষম

রাখতে সাহায্য করে।.মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি:পর্যাপ্ত ঘুম আমাদের মস্তিষ্ককে বিশ্রাম দেয় এবং মানসিক চাপ

কমাতে সহায়তা করে।.রোগ প্রতিরোগ ক্ষমতা বৃদ্ধি:নিয়মিত ঘুম আমাদের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে

,ফলে রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমে।.হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা:ঘুম হরমোন নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণ করে,যা

আমাদের শারীরিক বৃদ্ধি এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।.হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস:পর্যাপ্ত ঘুম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে

এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।.দিনের কার্যক্ষতা বৃদ্ধি:ভালো ঘুম আমাদের শরীরকে শক্তি দেয় এবং মনোযোগ ও

কর্মদক্ষতা বাড়ায়।

রাতে ঘুম না হওয়ার কারণ:

অনেকেই দিনের শেষে ক্লান্ত থাকা সত্তেও সহজে ঘুমাতে পারেন না।ঘুমের এই ব্যাঘাতের পেছনে নানা করণ থাকতে পারে

যেমন-মানসিক চাপ,অনিয়মিত জীবনযাপন,খাদ্যভ্যাসের ক্রটি,বা স্বাস্থ্যগত সমস্যা।রাতে ঘুম না আসার নিয়ে

নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা:

দিনের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান না হওয়া,কাজের চাপ,আর্থিক চিন্তা বা সম্পর্কজনিত জটিলতা আমাদের মনকে অস্থির করে তোলে।

এই মানসিক অস্থিরতা রাতে মস্তিষ্ককে বিশ্রাম নিতে বাধা দেয়,যার ফলে তন্দ্রা আসতে সময় লাগে বা একদমই ঘুম হয় না।

অনিয়মিত জীবনযাপন:

নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানোর অভ্যাস না থাকলে শরীরের অভ্যন্তরীণ ঘড়ি (বডি ক্লক) বিঘ্নিত হয়।

বিষেশ করে রাতে দেরি করে ঘুমানো এবং সকালে দেরি করে ওঠার অভ্যাস ঘুমের সময়সূচি এলোমেলো করে দেয়।

ক্যাফেইন এবং নিকোটিন গ্রহণ

চা বা কফির মতো ক্যাফেইনসমৃদ্ধ পানীয় স্নায়ুতন্ত্রকে উত্তেজিত করে,যা ঘুমের স্বাভাবিক চক্রে ব্যাঘাত ঘটায়।

একইভাবে,ধূমপানে থাকা নিকোটিনও মস্তিষ্কের কার্যক্রম বাড়িয়ে দেয়,যার ফলে সহজে ঘুম আসে না।

ইলেকট্রনিক ডিভাইসের ব্যবহার

ঘুমানোর আগে মোবাইল বা ল্যাপটপের স্ক্রিনে সময় কাটানোর ফলে মস্তিষ্ক অতি সক্রিয় হয়ে ওঠে।

এছাড়াও স্ক্রিনের নীল আলো মেলাটোনিন নামক ঘুমের হরমোনের উৎপাদন কমিয়ে দেয়।

স্বাস্থ্যগত সমস্যা:

অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া একটি সাধারণ সমস্যা,যেখানে শ্বাস নেওয়া বাধাগ্রস্ত হয়,ফলে ঘুম বারবার ভেঙে যায়।

এছাড়াও অ্যাসিড রিফ্লাক্স, পেট ফাঁপা বা অন্য যেকোনো শারীরিক ব্যথা দীর্ঘ সময় ধরে ঘুমাতে বাধা সৃষ্টি করে।

অস্বস্তিকর পরিবেশ:

ঘুমানোর পরিবেশ যদি আরামদায়ক না হয়,তবে ঘুমানো কঠিন হয়ে যায়। অতিরিক্ত গরম বা ঠান্ডা,বিছানা

অস্বস্তিকর মনে হতে পারে।এছাড়াও আশেপাশে বেশি শব্দ থাকলে ঘুম আসতে সমস্যা হয়।

অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস:

রাতের খাবার বেশি ভারী হলে বা অনেক দেরি করে খাওয়া হলে,তা হজম হতে সময় নেয়।এটি পেটের সমস্যার সৃষ্টি

করে এবং ঘুমের প্রক্রিয়া ব্যাহত করে।

ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া:

কিছু ওষুধ যেমন এন্টিডিপ্রেসেন্ট বা অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ স্নায়ুতন্ত্রকে অতি সক্রিয় করে

যা ঘুমাতে বাধা দেয়।চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবন করলে ঘুমের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

রাতে ঘুম না হলে করনীয়:

রাতে ঘুম না আসা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে।

তবে কিছু সহজ অভ্যাস গড়ে তোলার মাধ্যমে এই সমাধান সম্ভব।রাতে ঘুম ভালো করার জন্য নিচে কিছু পরামর্শ দেওয়া হলো:

প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানোর চেষ্টা করুন এবং ঘুম থেকে ওঠার  রুটিন তৈরি করুন।

শোবার আগে চা,কফি বা অন্য কোনো ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলুন।

রাতে ঘুম না হলে কি কি সমস্যা হয়:

‍ঘুমানোর আগে মোবাইল ল্যাপটপ বা টিভি ব্যবহার বদ্ধ করুন।ঘরকে অন্ধকার,শান্ত এবং আরামদায়ক রাখুন।

রাতে হালকা খবার খান এবং ভারী বা মসলাদার খাবার এড়িয়ে চলুন।শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম বা ধ্যান করুন,

যা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করবে।প্রয়োজনে গরম দুধ পান করুন বা ভালো একটি বই পড়ুন।

শারীরিক ব্যায়াম করুন,তবে ঘুমানোর আগে নয়।ঘুমের সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

রাতে ঘুম না হলে কি কি সমস্যা হয়পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব শরীর এবং মনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে,নিয়মিত

রাতে ঘুম না হলে বিভিন্ন স্বাস্থ্যের জটিলতা দেখা দিতে পারে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *